গোপালগঞ্জের দুটি উপজেলায় ১৯টি উন্নয়ন এলজিইডির প্রকল্প বাস্তবায়িত
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। প্রকল্পগুলো এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হওয়ায়
টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলার নিজলাভূমি বেষ্টিত পশ্চাদপদ এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দিগন্তের দ্বার উম্মোচিত হয়েছে। এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে প্রকল্পগুলো
ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। কৃষক উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারবে। ন্যয্যমূল্যে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে লাভবান হবেন।
এরমধ্যে দৃষ্টিনন্দন ২টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় মানুষের চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থা হয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এলজিইডি মাদ্রাসা ও এতিমখানা সমজিদ কমপ্লেক্স, শ্মশান, মন্দিরের উন্নয়ন
করেছে। এতে ধর্মপ্রাণ মানুষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ এহসানুল হক বলেন, আমরা ইতিমধ্যে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার
মধুমতি নদীতে পাটগাতী লঞ্চ স্টেশনে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল বোট ল্যান্ডি র্যাম্প নির্মাণ করেছি। টুঙ্গিপাড়া বাঘিয়ার নদীপাড়ের স্টিমার ঘাটে বোট ল্যান্ডিং র্যাম্প বাস্তবায় করেছি। এ দুটি স্থান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের স্মৃতি ধন্য। প্রকল্প ২টি দৃস্টি নন্দন। তাই এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ চিত্ত বিনোদনের জন্য আসছেন। বাঁশবাড়িয়া-ঝনঝনিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা মসজিদ কমপ্লেক্স, পাটগাতী শ্মশান উন্নয়ন,
পাটগাতী ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কুশলীহাট জিসি-ধারবাসাইল ভায়া মিত্রডাঙ্গা-সোনাখালী সড়কে ১৩ হাজার ৪০ মিটার চেইনেজে তারাইল
খালের ওপর ৪৫ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। পাটগাতী জিসি হতে বাঁশবাড়িয়া জিসি সড়কে ৫ হাজার ১৪ মিটার চেইনেজে মধুমতি নদীর ওপর ২২৫ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।
তারাইল জিসি-টুঙ্গিপাড়া হেড কোয়ার্টার ভায়া নারায়নখালী সড়ক পরিবেশ বান্ধব ইউনিব্লক দ্বারা উন্নয়ন করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, কোটালীপাড়া উপজেলার হরিনাহাটি বাজার-রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে ১০ মিটার চেইনেজে ৬০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। বান্ধাবাড়ী ইউপিসি-জহরেরকান্দি
বাজার সড়কের ৫ মিটার চেইনেজে ৩০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মিত হয়েছে। পিঞ্জুরী-সোনাখালী ভায়া চেয়ারম্যান বাজার সড়কে ৮ হাজার ৫৫০ মিটার চেইনেজে ২৪ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ
সম্পন্ন হয়েছে। পিঞ্জুরী-সোনাখালী ভায়া চেয়ারম্যান বাজার সড়কে ১০ হাজার ১০০ মিটার চেইনেজে ৪২ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। টুপুরীয়া আরএ্যান্ডএইচ ধোরার জিপিএস সড়কে ০০
মিটার চেইনেজে ৪৫ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। কলাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড-রাধাকান্ত উচ্চবিদ্যালয়-কালিগঞ্জ বাজার সড়কে ৫০০ মিটার চেইনেজে ৪৫ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ বাস্তবায়িত
হয়েছে। মাঝবাড়ী আরএইচডি-রাধাগঞ্জ বাজার সড়কে ২ হাজার ১০০ মিটার চেইনেজে ২৪ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মিত হয়েছে। মাঝবাড়ী আরএইচডি-রাধাগঞ্জ বাজার সড়কে ৬ হাজার ৭০০ মিটার চেইনেজে
৯০ মিটার পিএসসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া উপজেলার পারকোনা গ্রামে শ্রীশ্রী গনেশ পাগল মন্দির ও মাঝবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো উদ্বোধনের অপেক্ষায়
রয়েছে। আশাকরা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী কাল শুক্রবার এলজিইডির বাস্তবায়িত এ প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করবেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার মাঝবাড়ী গ্রামের কৃষক ওসমান দাড়িয়া বলেন, আমাদের এলাকা নি¤œজলাভূমি
বেষ্টিত ও পশ্চাদপদ। এখানে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মিত হওয়ায় আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। এখানে এভাবে সড়ক ও ব্রিজ নির্মিত হবে, তা আমারা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পরিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি
বাস্তবে পরিণত করেছেন। আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা এ সড়ক ও ব্রিজ পরিবর্তন ঘটাবে। আমরা উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারব। ন্যয্যমূল্যে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে লাভবান হব। এ জন্য
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
কোটালীপাড়া উপজেলার পারকোনা গ্রামের ভবতোষ বিশ্বাস ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমরিয়া গ্রামের ইফিল
মিয়া বলেন, এলজিইডি শুধু ব্রিজ, কালভার্ট, সড়ক বা স্থাপনা নির্মাণই করে না। তারা মন্দির, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা করে দিচ্ছে। পাশাপাশি শ্মশানের উন্নয়ন করছে। তাদের এ কাজকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
তাদের কাজে আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। এলজিইডির হাত ধরে এসেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। আমাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ কবরস্থান ও শ্মশানের দৃশ্যপট বদলে যাবে। এমনটি আমরা এলজিইডির কাছে প্রত্যাশা করি।
টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল বোট ল্যান্ডি র্যাস্পে ঘুরতে আসা জ্যোতি খানম বলেন, এটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজরিত। দৃষ্টিনন্দন একটি স্থাপনা। এখানে আসলে বঙ্গবন্ধুর ছোঁয়া পাওয়া যায়। ইতিহাস জানা যায় । মধুমতি
নদীর হাওয়ায় প্রাণ জুড়ায়। জাতির পিতার স্মৃতিকে ঘিরে এমন একটি স্থাপনা নির্মাণ করায় এলজিইডিকে আমি ধন্যবাদ জনাচ্ছি।